স্প্যামিং কি? কি কি কারনে স্প্যামিং হয় ও YouTube চ্যানেল সাসপেন্ড হয়ে যায়

 

স্প্যামিং কি? কি কি কারনে স্প্যামিং হয় ও YouTube চ্যানেল সাসপেন্ড হয়ে যায়
কি কি কারনে স্প্যামিং হয়

স্প্যামিং কি? কি কি কারনে স্প্যামিং হয় ও YouTube চ্যানেল সাসপেন্ড হয়ে যায়


আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই? আমি জান্নাতুল ফেরদৌস  আজকে আপনাদের সাথে স্পামিং কি ও কি কি কারনে চ্যানেলে স্পামিং  হয়ে সাসপেন্ড হয়ে যেতে পারে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব |


স্প্যামিং কি?


(Spam)  বা স্প্যামিং একটি ইংরেজি শব্দ | আর স্পামিং এর অর্থ আমি যদি আপনাদেরকে সহজে বোঝাতে চাই তাহলে এভাবে বলতে হয়, বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে আমাদের সবার হাতেই স্মার্টফোন থাকে | এছাড়া চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী বা অনেক স্টুডেন্ট তাদের কাজের প্রয়োজনে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি | আমরা যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কাজ করি তখন আমাদের সামনে অনেক সময় না চাইতেও অনেক বিষয় চলে আসে যেমন অনাকাঙ্ক্ষিত মেসেজ, অনাকাঙ্ক্ষিত কল, অথবা অনাকাঙ্ক্ষিত ইমেল | আর যখন এই অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো আমাদের সামনে চলে আসে এই  প্রক্রিয়াটাকেই স্প্যামিং বলে | স্প্যামিং  কে অনাকাঙ্ক্ষিত বলার কারণ হলো,এই বিষয়গুলো আমরা চাই না বা আমাদের প্রয়োজন নেই কিন্তু কিছু কিছু মানুষ তাদের খারাপ চিন্তা ভাবনাকে বাস্তবে রূপান্তর করার জন্য এই স্প্যামিং করে থাকে |


কি কি কারনে স্প্যামিং হয় ও YouTube চ্যানেল সাসপেন্ড হয়ে যায়


সাধারণত ইউটিউবে স্প্যামিং তিন ধরনের হয়ে থাকে


1. ভিডিও কমেন্টস স্প্যাম (Video Comments Spam)

2.  মিস লিডিং মেটাডাটা স্প্যাম (Misleading Metadata Spam)

3.  ট্রাফিক স্প্যাম (Traffic Spam)


ভিডিও কমেন্টস স্প্যাম (Video Comments Spam)


আমরা যখন কোন ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করি প্রথম প্রথম সেই চ্যানেলটি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বা প্রমোট করার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের উপায় ব্যবহার করে থাকি | তার মধ্যে একটি হলো youtube কমেন্টিং | কিন্তু এই ইউটিউব কমেন্টিং করার সময় অবশ্যই আমাদেরকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে তা না হলে তা ভিডিও কমেন্ট স্প্যামের আওতাভুক্ত হবে এবং আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাসপেন্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে | মনে করেন আপনি যখন আপনার নিজ রিলিভেন কোন চ্যানেলে গিয়ে সেখানে কমেন্টস করবেন তখন অবশ্যই বুঝে শুনে কমেন্টস করবেন | কখনো এমন কমেন্টস করবেন না যেটা সরাসরি আপনার চ্যানেলের উপর ইফেক্ট করে | আপনি যদি ভিডিও কমেন্টসে কমেন্ট করার সময় সরাসরি আপনার চ্যানেলের লিংক, বা আপনার facebook লিঙ্ক অথবা অন্য কোন লিংক ডিরেক্ট সাবমিট করেন তাহলে সেটা স্পামিং এর আওতাভুক্ত হতে পারে | অথবা আপনি যদি ভিডিওতে কমেন্টস করার সময় আপনার ফোন নাম্বার বা ইমেল অ্যাড্রেস সরাসরি বসিয়ে দেন সেটাও স্প্যামিং এর মধ্যে পড়ে যাবে | আপনাকে ভিডিওতে এমন ভাবে কমেন্টস করতে হবে যেন সেটা ভিডিওর সম্পর্কিত হয় এবং সেখানে আপনি আপনার চ্যানেলের কিছু কথা বলতে পারেন | কিন্তু সরাসরি আপনি সেই কমেন্টসে আপনার চ্যানেলের লিংক দিতে পারবেন না অথবা  ডিরেক্টলি আপনার চ্যানেলের কোন প্রোমোশনও করতে পারবেন না | আপনি যদি কমেন্টসে লিখে দেন sub for sub  যার অর্থ হল তুমি আমার চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করো তাহলে আমিও তোমার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইব করব | এই ধরনের কমেন্ট সো ভিডিওর  কমেন্ট সেকশনে করা যাবে না | এছাড়া আপনি কমেন্টে কাউকে কোন গালিগালাজ করতে পারবেন না এতে করে আপনার youtube চ্যানেল সাসপেন্ড হয়ে যেতে পারে | সুতরাং যখন একটি নতুন চ্যানেল ওপেন করবেন তখন অবশ্যই ভিডিও কমেন্টস করার সময় সতর্ক থাকবেন তা নাহলে যে কোন মুহূর্তে আপনার youtube চ্যানেলটি ইউটিউব কর্তৃপক্ষ থেকে সাবস্ক্রাইব করে দিতে পারে |


মিসলিডিং মেটাডাটা স্প্যাম (Misleading Metadata Spam)


Youtube এ ভিডিও আপলোড করার সময় অবশ্যই আপনাকে ভিডিও টাইটেল এবং ডেসক্রিপশনে ডেকে লক্ষ্য রেখে ভিডিও আপলোড করতে হবে | আপনি যে টপিক নিয়ে ভিডিও তৈরি করবেন সেই টপিকে হয়তো বা youtube এ আরও অনেক ভিডিও রয়েছে | তাই আপনি যদি সেই ভিডিওগুলো থেকে হুবহু কোন টাইটেল এনে কপি করে আপনার ভিডিওতে এড করেন সে ক্ষেত্রে ইউটিউব সেটি স্প্যামিং কি ধরতে পারে |এছাড়া আপনার ভিডিওর টাইটেল অবশ্যই আপনার ভিডিও সম্পর্কিত রিলেটেড হতে হবে | মনে করেন আপনার ভিডিও হচ্ছে কোন এডুকেশন রিলেটেড কিন্তু আপনি সেখানে ফানি টাইটেল ব্যবহার করছেন সে ক্ষেত্রে কিন্তু স্প্যামিং হতে পারে | এছাড়া ভিডিও ডেসক্রিপশন লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে | আপনি যদি অন্য কারো ভিডিও থেকে হুবহু ডেসক্রিপশন কপি করে এনে আপনার ভিডিওতে এড করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার ভিডিও স্প্যামিং এর আওতাভুক্ত হবে ও চ্যানেল সাসপেন্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে | এমন কি আপনি যদি অন্য একটি চ্যানেলের ভিডিও থেকে তাদের ট্যাগগুলি  কপি করে আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করেন সে ক্ষেত্রে স্প্যামিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে | তাই ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার সময় অবশ্যই টাইটেল ডেসক্রিপশন ট্যাগ এগুলো সম্পূর্ণ আপনার ভিডিওর  রিলেটেড হতে হবে এবং আপনার নিজের হতে হবে | যদি আপনি এ বিষয়গুলো খেয়াল না রাখেন তাহলে সেটা মিসলিডিং মেটাডাটা স্প্যামিং এর আওতাভুক্ত হয়ে চ্যানেল সাসপেন্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে |



ট্রাফিক স্প্যাম (Traffic Spam)


এখন প্রায়শই ফেসবুকে প্রবেশ করলে দেখা যায় টাকার বিনিময়ে লাইক ভিউ কমেন্টস বিক্রি করা হয় | আমরা অনেকে না জেনে বুঝে এ সমস্ত লাইক ভিউ কমেন্টস টাকা দিয়ে ক্রয় করি | কিন্তু আপনি যদি মনে করেন টাকা দিয়ে সবকিছু করা যায় তাহলে আপনি হচ্ছেন একজন বিশ্বস্ত বোকা | কারণ  youtube এর মত এত বড় একটা প্ল্যাটফর্ম নিশ্চয়ই কোন ছোটখাটো টেকনোলজি দিয়ে তৈরি | তাই আপনি যখনই কোন কিছু বেআইনিভাবে করবেন সেটা youtube অবশ্যই বুঝতে পারবে | আপনি যখন কারো কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে লাইক ভিউ ক্রয় করবেন তখন তারা আপনাকে বলবে এটা ১০০% রিয়েল কিন্তু আদৌ কিন্তু এটা রিয়েল না | আর এই বিষয়টা ক্যাচ করা ইউটিউব এর কাছে খুবই সহজ | কারণ হলো ইউটিউব এর এর বট গুলি সার্বক্ষণিক প্রতিটা ভিডিও রিভিউ করে থাকে | একটি ভিডিও আপলোড করার পরে সেখানে আপনি যে পরিমাণ ভিউ পাবেন তার ৩০ থেকে ৫০ পার্সেন্ট ভিউ অবশ্যই ইউটিউব থেকে হতে হবে | কিন্তু আপনি যখন কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিউ আপনার ভিডিওতে নিয়ে আসছেন তখন কিন্তু youtube সেটা পর্যবেক্ষণ করতে পারবে | এবং সে যখন দেখবে আপনার শুধুমাত্র একটি ভিডিওতেই এত পরিমান ভিউ হচ্ছে কিন্তু অন্য কোন ভিডিওতে তেমন কোন ভিউ নেই তখন কিন্তু তারা আপনার এই চালাকিটা ধরে ফেলবে | এছাড়া যারা টাকার বিনিময়ে আপনার ভিডিওগুলো দেখবে তারা কিন্তু পুরো ভিডিওটি দেখবে না সে ক্ষেত্রে আপনার বাউন্স রেট প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যাবে | আর ভিডিওতে  বাউন্স রেট বেড়ে গেলে সেটা আপনার চ্যানেলের জন্য খুবই ক্ষতিকর | ইউটিউব  এমন এমন টেকনোলজি ব্যবহার করছে যার মাধ্যমে সে খুব সহজেই স্প্যামারদের ধরে ফেলতে পারে | তাই প্রফেশনাল ওয়েতে কখনোই টাকার বিনিময়ে লাইক দিয়ে কমেন্টস কিনতে যাবেন না | এতে করে আপনি আপনার অজান্তেই আপনার ইউটিউব চ্যানেলের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলবেন যা একটি চ্যানেল সাসপেন্ড হওয়ার জন্য যথেষ্ট | 


সুতরাং একটি youtube চ্যানেল খোলার পরে অবশ্যই আপনাকে ইউটিউবের নিয়ম নীতিগুলো মেনে চলতে হবে এবং এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন ইউটিউব আপনার কোন কাজে ইসলামিক ধরতে না পারে | আর যদি তারা কোন স্প্যামিং অ্যাক্টিভিটি আপনার চ্যানেলে খুঁজে পায় তাহলে চ্যানেলটি সাসপেন্ড করে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে | 

More important article for you





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ